সার্চ ইন্জিন নিয়ে কয়েকদিন হল খুব আলোচনা হচ্ছে। কোন সার্চ ইন্জিন কার চেয়ে ভাল, কোনটা কার চেয়ে ফাস্ট আর কে কার কাছ থেকে টাকা খেয়ে সার্চ রেজাল্টকে উপরে তোলে ইত্যাদি ইত্যাদি।একটা স্পষ্ট ধারণা পেতে আসুন দেখি কিভাবে কাজ করে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ সার্চ ইন্জিন গুগল।

বর্তমানে গুগল কয়েক লক্ষ সার্ভার ব্যবহার করে। গুগলের কৌশল হচ্ছে কাস্টমাইজ করা অপারেটিং সিস্টেম যুক্ত কমদামী সিস্টেম ব্যবহার করা। অপারেটিং সিস্টেমটি লিনাক্স। সার্ভারগুলো ডকুমেন্ট সার্ভার, অ্যাড সার্ভার ইত্যাদি বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত। সার্ভারগুলোতে ডাটা ৬৪ মেগাবাইট ব্লকে স্টোর করা থাকে। ডাটার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিটি ডাটা তিনটি করে কপি করা হয় এবং স্টোর করা হয় আলাদা পাওয়ার সাপ্লাই সম্বলিত মেশিনে। একটি পাওয়ার সাপ্লাই লাইনে পরিচালিত কোন সার্ভারে একই ডাটার দুটি কপি থাকে না। এবং ডাটাগুলো এমন ভাবে বন্টন করা হয় যাতে যেকোন দুটি সার্ভারে কখনই একই রকম ডাটা থাকে না। মানে বিষয়টা এরকম, কোন সার্ভারে যদি জিমেইল, ইনডেস্ক ও আর্থের ডাটা থাকে। অন্যকোন সার্ভারে ঠিক এই তিনরকম ডাটা থাকবে না। হয় জিমেইল, ইনডেস্ক, ইমেজ অথবা ইনডেস্ক, আর্থ, গুগল ডক এরকম। দ্বিতীয় কোন সার্ভার পাবেন না যেটাতে জিমেইল, ইনডেস্ক ও আর্থের ডাটা আছে।

গুগল প্রধানত তিনটি ভাগে বিভক্ত:
১। গুগলবট
২। ইনডেক্সার
৩। কুয়েরী প্রসেসর

গুগলবট:
গুগলবট ওয়েব থেকে পেজ সংগ্রহ করে। এর কার্যপদ্ধতি অনেকটা আমাদের ব্যবহার করা ওয়েব ব্রাউজারের মতই। গুগলবটও ওয়েব সার্ভারে ব্রাউজারের মত পেজ রিকোয়েস্ট পাঠায়। সার্ভার থেকে পেজগুলো পাঠানো হলে সেগুলো স্টোর করে। আমাদের ব্রাউজারের মত হলেও গুগলবট অনেক বেশী দ্রুতগতি সম্পন্ন। অসংখ্য কম্পিউটারের সমন্বয়ে গুগলবট একসাথে কয়েক হাজার পেজ রেকোয়েস্ট পাঠাতে পারে। অনেক দুর্বল সার্ভার গুগলবটের এই বিপুল সংখ্যক রিকোয়েস্ট রেসপন্ড করার সাথে সাথে সাধারণ ইউজারদের রিকোয়েস্ট রেসপন্ড করতে পারে না। তাই সাধারণ ব্যবহারকারীদের প্রধান্য দিয়ে গুগলবটকে পূর্ণক্ষমতায় চালানো হয় না।

গুগলবট নতুন ইউআরএল সংগ্রহ করে প্রধানত দুইটি উপায়ে
১। http://www.google.com/addurl.html এই পাতায় সাবমিট করা পেজ।
২। ওয়েব ক্রলিং এর মাধম্যে।

গুগলবট যখন একটি পেজ সংগ্রহ করে তখন এই পেজে পাওয়া লিংকগুলো তার ক্রলিং তালিকায় যোগ হয়। এই পদ্ধতিতে একই লিংক অসংখ্যবার আসে, কিত্তু গুগলবট সেগুলোকে বাদ দিয়ে একটি তালিকা তৈরি করে যাতে সবচেয়ে কম সময়ে পুরো ওয়েবকে কভার করা সম্ভব। এ ব্যবস্হাকে বলে ডিপ ক্রলিং। কোন পেজ কত দ্রুত পরিবর্তন হয় সেটি ঠিক করা গুগলবটের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব। গুগল ডাটাবেজকে আপডেট রাখার ক্ষেত্রে এটি সবচেয়ে বেশী জরুরী। গুগলবট কোন পেজে পরিবর্তনের একটা ফ্রিকোয়েন্সী বের করে এবং সেই হিসেবে ঠিক করা হয় যে গুগলবট কত সময় পর পর কোন পেজ ক্রলিং করবে। কারণ যে পেজ মাসে একবার পরিবর্তন হয় সেটা কয়েকঘন্টা পরপর ক্রলিং করা সময় নষ্ট ছাড়া আর কিছুই না। সামুর মত সবসময় পরিবর্তনশীল সাইটগুলো কয়েকঘন্টা পর পর ক্রলিং করা হয়। দৈনিক পত্রিকাগুলো প্রতিদিন আর বাংলাদেশের বেশীরভাগ সরকারী সাইটের মত পেজগুলো মাসে একবার (বছরে একবার করলেও চলত :P)। ডাটাবেজ আপডেট করার এই ক্রলিংকে ফ্রেশ ক্রলিং বলে।


গুগল ইনডেক্সার: গুগল ইনডেক্সারের কাজ তুলনামূলকভাবে সহজ। গুগলবট ইনডেক্সারকে ক্রলিং করা পেজগুলোর ফুল টেক্সট দেয়। ইনডেক্সার সার্চ টার্মগুলোকে বর্ণমালা অনুক্রমে সাজায় এবং কোন টার্ম কোথায় আছে তা সেভ করে রাখে। কিছু পরিবর্তনও আনা হয় পেজগুলোতে। কিছু বিরাম চিহ্ন বাদ দেয়া হয়। একের অধিক স্পেস থাকলে সেটাও বাদ দেয়া হয়। ইংরেজীর ক্ষেত্রে বড় হাতের অক্ষরগুলোকে ছোট হাতের অক্ষরে পরিবর্তন করা হয়।

গুগল কুয়েরী প্রসেসর: এটি সর্বশেষ অংশ। এটাই আমাদের সার্চ রেজাল্ট প্রসেসিং করে। কুয়েরী প্রসেসর কয়েকটি অংশে বিভক্ত,ইউজার ইন্টারফেস, কুয়েরী ইন্জিন, রেজাল্ট ফরম্যাটর ইত্যাদি। গুগলের ওয়েবপেজ Ranking সিস্টেমের নাম PageRank। যে পেজের PageRank যতবেশী সেটা সার্চ রেজাল্টে তত উপরে থাকে। PageRank নির্ধারণ করা হয় অনেক কিছু বিচার করে। পেজটার পপুলারিটি, সার্চ টার্মের অবস্হান ও আকার, অন্য পেজে টার্মটি কতবার আছে, একাধিক টার্ম হলে শব্দগুলোর মাঝে দুরত্ব,পেজটি কতদিন ধরে ওয়েবে আছে ইত্যাদি অনেক কিছু বিচার করে PageRank নির্ধারণ করা হয়। একই সাথে গুগল সার্চ টার্মগুলোর পারস্পরিক সামাঞ্জস্বতা বিচার করে। এর ভিত্তিতে গুগলের spelling-correction সিস্টেম কাজ করে। গুগলবট যেহেতু টেক্সটের সাথে পেজ কোডও ক্রলিং করে তাই ইউজার চাইলে সার্চ টার্মটির অবস্হানও নির্দিষ্ট করে দিতে পারে যে সেটি লিংকে থাকবে, টাইটেলে থাকবে না লেখায় থাকবে। শুধু টার্মের উপস্হিতির উপর ভিত্তি করে রেজাল্ট না দেওয়ার কারণেই গুগলের সার্চ রেজাল্টের মান এত উন্নত।

১৯৯৮ সালে গুগল ব্যবহৃত যন্ত্রপাতিগুলো ছিল:

*দুইটে ডুয়েল পেন্টিয়াম টু প্রসেসর ৩০০ মেগাহার্জ সার্ভার যাদের ছিল মেগাবাইট ৫১২ মেগাবাইট RAM
*চারটি প্রসেসর যুক্ত ৫১২ মেগাবাইট RAM এর একটি F50 IBM RS6000 কম্পিউটার
*একটি ডুয়েল প্রসেসর Sun Ultra II ৫১২ মেগাবাইট RAM যুক্ত কম্পিউটার।
*কয়েকটি হার্ডডিস্ক, প্রতিটি ৪ থেকে ৯ গিগাবাইট। মোট ৩৫০ গিগাবাইট ।

বর্তমানে গুগলের রয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন স্হানে কয়েকলক্ষ সার্ভার ।মোট ডাটার পরিমান প্রায় ৩০০ টেরাবাইট। ২০০৪ সাল থেকে গুগল ইন্টেলের পরিবর্তে AMD প্রসেসর ব্যবহার করছে বিদ্যূত সাশ্রয়ের জন্য।

***ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ ও অনুবাদকৃত
বাংলাদেশের টিভি চ্যানেলগুলো আস্তে আস্তে আমার সহ্যসীমার বাইরে চলে যাচ্ছে মনে হয়। এমনিতে টিভি দেখি না। খবরও না। নেটে দুই-তিনটা পত্রিকা, বিডিনিউজ২৪ আর সামুতে চোখ রাখলে কোন খবরই মিস হবার কথা না। ঈদের অনুষ্ঠান দেখতে গিয়ে কিছু অ্যাড দেখে মেজাজ খারাপ হয়েছিল। টিভি দেখা পর্বের শেষের দিকে গতকাল “বিশ্বের প্রথম ২৪ ঘন্টা ডিজিটাল বাংলা স্যাটেলাইট চ্যানেল (!!!)” চ্যানেল আই এর “জন্মদিন” নামক ন্যাকামো দেখ সেটা পূর্ণ হল । তাই আপাতত টেকি বিষয় বাদ দিয়ে এই বিষয়ে একটু লিখছি। তার আগে নিজের একটা সন্দেহের কথা বলি। আচ্ছা, আপনাদের কি মনে হয়, চ্যানেল আর নির্মাতারা বেশী ন্যাকামো করছে নাকি আমি নিজেই অ্যাবনরমাল হয়ে যাচ্ছি? কাল দেশের বরেণ্য সন্মানীত অসংখ্য ব্যক্তির মুখে যে ভাবে চ্যানেল আইয়ের স্তুতি আর শুভেচ্ছার বাণী শুনলাম তাতে আমার মনে হচ্ছে আমি নিজেই অ্যাবনরমাল। সেটা ভাবাই বরং ভাল। স্তুতির কথা বাদ দিই, তাঁরা তাঁদের পছন্দের চ্যানেলের প্রশংসা করতেই পারেন। কিন্তু, তাঁরা যে “জন্মদিনের” শুভেচ্ছা জানতে গিয়ে স্বরচিত গান, কবিতা আর কথার প্রায় অপব্যবহার করলেন সেটা কি তাঁরা বোঝেন না? চ্যানেলের জন্মদিন! তাও আবার ৫০ বা ১০০তম না ১১ তম। সেটা নিয়ে ১০০ পাউন্ডের কেক কাটা, দেশের কয়েকশ শ্রেষ্ঠ বুদ্ধিজীবির অংশগ্রহণ, রাস্তা আটকে বিরাট রেলী!!! একটা স্যাটেলাইট চ্যানেলের ১১ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এভাবে পালন কি আদিখ্যেতা না? অনেক দেশের চ্যানেলই দেখেছি। কোথাও তো কোনদিন দেখলাম না প্রতি বছর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করা হয়, ঘটা করে পালনের কথা বাদ দিলাম। চিন্তা করুন, পাশের দেশ ভারতে সব চ্যানেল যদি এভাবে প্রতিবছর প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ঘটা করে পালন করতে যায় তাহলে ভারতের বুদ্ধিজীবি আর কবি,শিল্পী-সাহিত্যিকদের আর কোন কাজ করার সময় থাকবে না, শুধু এগুলোই অ্যাটেন্ড করতে হবে। আর, সব বড় শহরে রেলী করার জন্য আলাদা রাস্তা করে দিতে হবে! চ্যানেলের জন্মদিনের যাবতীয় আয়োজন চ্যানেলে বিশেষ অনুষ্ঠান আর আয়োজনেই সীমাবদ্ধ থাকা উচিত নয় কি?

আরও যে বিষয়টা আদিখ্যেতাটাকে চুড়ান্ত রুপ দিয়েছে সেটা হল, “জন্মদিনে” প্রধানমন্ত্রী আর রাষ্ট্রপতির শুভেচ্ছা। দেশের একটা স্যাটেলাইট চ্যানেলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কি এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চস্তর থেকে শুভেচ্ছা জানতে হবে? আমাদের দেশটা ছোট, হয়ত একটা স্যাটেলাইট চ্যানেল আমাদের জন্য বিরাট ব্যাপার, আমাদের আনন্দের উপলক্ষ্য হয়ত খুবই কম কিন্তু দেশের রাষ্ট্রপতি আর প্রধানমন্ত্রীর সন্মান কিন্তু কম না। রাষ্ট্রপতি আর প্রধানমন্ত্রী যে দেশেরই হোন না কেন পদের দিক থেকে তাঁদের মর্যাদা কিন্তু সমান। এই দুইজন ব্যক্তি এরকম একটা তুচ্ছ ব্যাপারে না জড়ালে কি চলত না? দেশের সব চ্যানেলের প্রতিবছর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে দেখি রাষ্ট্রপতি আর প্রধানমন্ত্রীর শুভেচছা! তাহলেতো একটু আগবাড়িয়ে সামুতে আমার বর্ষপূর্তি বা ১ লাখ হিট পূর্তিতে রাষ্ট্রপতি আর প্রধানমন্ত্রী শুভেচ্ছাবার্তা আমিও আশা করতে পারি নাকি!!! দেশের সরকার আর রাষ্ট্রপ্রধান এতটাই সহজলভ্য? নাকি কৌশিকদার কথাই ঠিক! আমার চিন্তাভাবনাই সাইকিক। তাই যেন হয়!!!
জিমেইল হচ্ছে বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে আধুনিক ইমেইল সার্ভিস। এটাকে এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে এটা একেবারে আপনার জীবনের সাথে মিশে যেতে পারে। ব্যবহার শুরু করলে দেখবেন কিছুদিন পর এটা জীবনের অংশ বলে মনে হচ্ছে, এটা অবশ্য অ্যকটিভ ইউজারদের জন্য প্রোযোজ্য। আসুন দেখি কি আছে জিমেইলে, সবাই মোটামুটি জানেন কিন্তু তাও একবার চোখ বুলিয়ে দেখুন কোনটা বাদ গেল কিনা বা নতুন কিছু আছে কিনা। এ পর্বে আলোচনা করব জিমেইলের স্ট্যাবল ফিচারগুলো নিয়ে। আগামী পর্বে থাকবে পরীক্ষামূলক ফিচারগুলো।


স্টোরেজ: একেবারে শুরুতে জিমেইল সারা পৃথিবীতে হইচই ফেলে দিয়েছিল এর বিশাল স্টোরেজের কারণে। কারণ সেসময় ফ্রী ইমেইল সার্ভিসগুলো সর্বোচ্চ ১০০ মেগাবাইট স্টোরেজ দিত। আর জিমেইল শুরুই করে ১ গিগা দিয়ে, যা এখন ৭ গিগা। একটা ব্যাপার এখানে উল্লেখ্য যে জিমেইলের স্টোরেজ কিন্তু প্রতি মুহূর্তেই বাড়ছে। জিমেইল হোমপেজে গিয়ে দেখুন স্টোরেজ কাউন্টার ২৪ ঘন্টাই বাড়ছে। এই বৃদ্ধির হার কিন্তু আবার পরির্বতন হয়। যেমন ধরুন, ১২ অক্টোবর ২০০৭ এ বৃদ্ধির হার ছিল ঘন্টায় ৫.৩৭ মেগাবাইট। সাধারণত এত থাকে না।


সিকিওরিটি: জিমেইল অত্যন্ত সিকিওর। এর লগইন পেজ ১২৮ বিট SSL সিকিওর্ড। আপনি চাইলে পুরো জিমেইলেই এটি ব্যবহার করতে পারেন। এজন্য সেটিংস থেকে Browser connection এ Always use https সিলেক্ট করুন। জিমেইল নতুন একটা ফিচার সম্প্রতি যোগ করেছে যার দ্বারা পাসওয়ার্ড ভুলে গেলে পাসওয়ার্ড রিসেট কোড এসএমএসের মাধ্যমে পেতে পারেন। এতে আরও একটা সুবিধা হল অন্য কেউ যদি আপনার অ্যাকাউন্টের Forgot Password অপশন ব্যবহার করে, আপনি সাথেসাথে তা জানতে পারেন।

লেবেল: জিমেইলই মেইল দুনিয়ায় লেবেল ধারণার প্রর্বতক। অন্য মেইল সার্ভিসে ফোল্ডার তৈরী করে বিভিন্ন ক্যাটাগরীর মেইল আলাদা করা হলেও জিমেইলে লেবেলিং করতে হয়। ফোল্ডারের চেয়ে লেবেল সুবিধাজনক কারণ আপনি একটা মেইল কেবল একটা ফোল্ডারেই রাখতে পারবেন, কিন্তু লেবেলের ক্ষেত্রে একটা মেইলে আপনি যত খুশি লেবেল লাগাতে পারেন। ধরুন আপনার বন্ধু তার বিয়েতে আমন্ত্রণ জানিয়ে আপনাকে ইমেইল করেছে। আপনার হয়ত Friends, Important, Good News নামে তিনটা ফোল্ডার আছে। আপনার বন্ধুর ইমেইলটা তিনটা ক্যাটাগরীতেই পড়ে, আপনি কোন ফোল্ডারে রাখবেন? লেবেলের সুবিধা এখানেই, আপনি তিনটা লেবেলই লাগাতে পারেন মেইলটাতে।

ফিল্টার: জিমেইল ফিল্টারের মাধ্যমে আপনার ইনবক্স নিজেই অর্গানাইজড হয়ে থাকবে। আপনি আপনার বন্ধুদের ইমেইল অ্যাড্রেস দিয়ে ফিল্টার তৈরী করতে পারবেন যেন তাদের কাছ থেকে আসা ইমেইল Friends লেবেলিং হয়। একইভাবে নেটের বিভিন্ন সাইট ও ফোরাম থেকে আসা মেইল, নিউজলেটার ইত্যাদির জন্য একটা ফিল্টার তৈরী করতে পারেন। কি‌ওয়ার্ড ব্যবহার করতে পারেন ফিল্টার তৈরী করার জন্য য়েমন TO:,From: , has:attachment, in:inbox, has the words ইত্যাদি। বিরক্তিকর কারও ইমেইল বারবার এলে সরাসরি Trash করতে পারেন। বিশেষ কারও কাছ থেকে আসা ইমেইল স্টার মার্ক করতে পারেন,এমনকি অন্য অ্যাড্রেসে ফরোয়ার্ডও করতে পারেন। আবার এমন অনেক মেইল আছে যেগুলো হয়ত আপনি এখন পড়তে চান না, কিন্তু পরে আপনার কাজে লাগতে পারে সেগুলো “Skip Inbox” ও “Mark as Read” সহ ফিল্টার করে আলাদা লেবেল করে রাখতে পারেন। তাহলে এগুলো আপনার অগোচরে জমা হতে থাকবে, আপনি টেরও পাবেন না। কিন্তু দরকারের সময় সার্চ করে সহজেই বের করতে পারবেন। যেমন আমি উইকিপিডিয়া, Bdnews24.com ইত্যাদির RSS feed subscribe করে ফিল্টার করে রেখেছি। এখন একটাও পড়ি না, কিন্তু পরে যদি কোন খবর বা কোন একটা কিছু জানার দরকার হয় তাহলে আমার আর বাইরে সার্চ করার দরকার নেই, নিজের ইনবক্স সার্চ করলেই হবে। নিজের একটা নিউজ ও তথ্য আর্কাইভ হয়ে গেল কোন ঝামেলা ছাড়াই!

বহুমুখী ঠিকানা: জিমেইলের আপনার অ্যাড্রেসটিকে আপনি নানাভাবে পরির্বতন করে নিতে পারেন। আপনার আইডি যদি my.name@gmail.com আপনি এটাকে myn.ame@gmail.com, myname@gmail.com, m.yname@gmail.com অর্থাৎ ডটটাকে যেকোন জায়গায় দিতে পারেন, এমনকি না দিলেও সমস্যা নেই, ইমেইল আপনার কাছেই আসবে। একইভাবে আইডির পরে য়োগ চিহ্ন ব্যবহার করতে পারেন ইচ্ছামত। ধরুন, সামহয়্যারে রেজিষ্ট্রেশন করার সময় দিলেন my.name‍+somewhere@gmail.com। পরে ফিল্টার করার সময় to: my.name+somewhere@gmail.com ব্যবহার করতে পারবেন। ফিল্টার করার সুবিধা ছাড়াও এর মাধ্যমে আপনি ধরতে পারবেন কোন সাইট স্পামারদের কাছে আপনার ইমেইল অ্যাড্রেস বিক্রি করে কিনা। কোন স্পাম মেইল যদি দেখেন to:my.name+somewhere@gmail.com বুঝবেন কালপ্রিটটা কে!!! :P

অন্য অ্যাড্রেস যোগ করা:
জিমেইল ব্যবহার করে আপনি আপনার অন্য ইমেইল অ্যাড্রেস থেকে ইমেইল পাঠাতে পারবেন। Settings এর “Send mail as” অপশন থেকে যতগুলো খুশি ইমেইল অ্যাড্রেস যোগ করতে পারেন, কনফার্ম করতে হবে অবশ্য।

অন্য অ্যাকাউন্টেট মেইল পড়া: একইভাবে আপনার অন্য অ্যাকাউন্টের ইমেইল পড়তেও পারবেন জিমেইলে। Settings এর “Get mail from other accounts” এ গিয়ে অন্য কোন অ্যাকাউন্টের ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে সেভ করুন। ব্যাস। ব্যাপারটা দাঁড়াচ্ছে এরকম যে আপনি জিমেইলই অন্য অ্যাড্রেস থেকে ইমেইল পাঠাতেও পারবেন, পড়তেও পারবেন। এই ব্যাপারটা আমি মেইল ব্যাকাপ রাখার কাজেও লাগাই। আলাদাএকটা জিমেইল অ্যাকাউন্ট খুলে সেটাতে আমার বর্তমান অ্যাড্রেসটা যোগ করে দিয়েছি। এখন আমার ইমেইল আপনাআপনিই ব্যাকাপ থাকে! :)

ফরোয়ার্ডিং: জিমেইল থেকে আপনি আপনার সব ইমেইল যেকোন অ্যাড্রেসে অটোফরোয়ার্ড করতে পারেন। এই সুবিধা ব্যবহার করে আমি দারুণ একটা কাজ করেছিলাম। সব মেইল ফরোয়ার্ড করেছিলাম গ্রামীণের cellemail.net অ্যাড্রেসে। cellemail.net এ কোন ইমেইল আসলে গ্রামীণফোন এসএমএস অ্যালার্ট পাঠাত ;)। সব মেইল cellemail.net অ্যাড্রেসে ফরোয়ার্ড করার ফলে জিমেইলে মেইল আসলেও এসএমএস অ্যালার্ট পেতাম :P:P:P। এখন অবশ্য cellemail.net সার্ভিসটাই বন্ধ হয়ে গেছে :(

ফ্রী POP3 ও IMAP:
জিমেইল POP3 ওIMAP ফ্রী দেয়। অথচ ইয়াহুতে এই সুবিধা পেতে হলে পেইড কাস্টোমার হতে হয়। POP3র সাথে IMAP এর প্রধান পার্থক্য হচ্ছে POP3র মাধ্যমে আপনি ইমেইল ক্লায়েন্ট বযবহার করে কোন মেইল ডাউনলোড করে সেটি পড়ুন, ডিলিট বা লেবেলিং যাই করুন না কেন আপনার ইনবক্সে তার কোন ইফেক্ট পড়ে না। কিন্তু IMAP তে আপনি লোকাল মেইল ক্লায়েন্টে যা করবেন ইনবক্সে সেটাই দেখাবে।

চ্যাট: জিমেইলের একটা অন্যতম বড় আকর্ষণ হল সরাসরি ইনবক্স থেকে চ্যাটিং করা যায়। এর জন্য আলাদা কোন সফটওয়্যার লাগে না। এমনকি সম্প্রতি তারা ভয়েস ও ভিডিও চ্যাটিং সুবিধাও দিয়েছে। এতেও ছোট একটা প্লাগইন ছাড়া কিছুই ডাউনলোড করা লাগে না।

থিম: আপনার ইনবক্সকে রাঙ্গাতে জিমেইলে রয়েছে ৩২ টি থিম। এই থিমগুলোর বড় বৈশিষ্ট্য হল এগুলো সময়ের সাথে সাথে বদলায়, ঠিক যেন জীবন্ত। যেমন ধরুন, টেবিলটপ থিমটির কথা। আপনার টেবিলে যেমন সবসময় একই জিনিস থাকে না, এই থিমটি চালু করলে আপনার ইনবক্সের এ কোণা ও কোণায় কলম, খাম, পেপার ক্লিপ, কাগজ পড়ে থাকতে দেখবেন। ৩২ টির কোনটিই যদি আপনার পছন্দ না হয় আপনি নিজেও কাস্টোমাইজ করতে পারবেন।

কিবোর্ড শর্টকার্ট: কিবোর্ড শর্টকার্ট ব্যবহার করে আপনি অনেক দ্রুত বিভিন্ন কাজ করতে পারবেন। কয়েকটি শর্টকার্ট হল,

নতুন মেইল লেখা: c
সার্চ: /
নতুনতর কনর্ভারসেশন: k
পুরোনতর কনর্ভারসেশন: j
কনর্ভারসেশন সিলেক্ট: x
কনর্ভারসেশন স্টার করা: s
লেবেল সরানো: y
স্পাম রিপোর্ট: !
মেইল ট্রাশ করা: #
পরের মেসেজ: p
আগের মেসেজ: n
রিপ্লাই: r
সবাইকে রিপ্লাই: a
ফরোয়ার্ড: f
আর্কাইভ করা: e
আনরিড মার্ক করা: U
রিড মার্ক করা: I

এগুলো আপনি নিজের ইচ্ছামত পরিবর্তনও করতে পারবেন তবে তার জন্য ল্যাব ফিচারের সাহায্য নিতে হবে। সে সম্পর্কে পরের পর্বে লিখব।
যারা ইংরেজী ক্লাসিক বই পড়তে ভালবাসেন তাদের জন্য প্রোজেক্ট গুটেনবার্গ মোটামুটি হীরার খনি!প্রোজেক্ট গুটেনবার্গ হচ্ছে পৃথিবীর প্রথম ই-বুক নির্মাতা। প্রোজেক্টের যাত্রা শুরু হয় ১৯৭১ সলে মাইকেল এস হার্ট নামে একজন জনদরদী ব্যক্তির প্রচেষ্টায়। তিনিই প্রথম ডিজিটাল বইয়ের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধী করেন এবং সারা বিশ্বের কপিরাইট মুক্ত বইগুলো ডিজিটালাইজেশন শুরু করেন। বইগুলো মুক্ত ফরম্যাটে এমনভাবে রুপান্তরিত করা হয় যাতে বিশ্বের সকল কম্পিউটারে তা পড়া যায়। এছাড়াও বইগুলো প্ল্যাম, অরগানাইজার ও স্মার্টফোন এমনকি জাভা এনাবল মোবাইলের জন্য বিশেষভাবে তৈরী ফরম্যাটেও পাওয়া যায়।

১৯৭১ সালে মাইকেল এস হার্ট যখন যুক্তরাষ্টের ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তখন তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যাটেরিয়ালস রিসার্স ল্যাবে আনলিমিটেড কম্পিউটার ব্যবহারের সুযোগ পান, সে সময় যার আর্থিক মূল্য বিবেচনা করা হয় প্রায় ১০০০০০ ডলারেরও বেশী। তিনি এই সুযোগ কাজে লাগান জনকল্যাণমুলক কিছু করার জন্য। তখন তাঁর লক্ষ্য ছিল ২০০০ সালের মধ্যে অন্তত ১০০০০ বইয়ের ডিজিটাল ভার্সন প্রকাশ করা যা জনসাধারণ বিনামূল্য বা নামমাত্র মূল্যে পাবে। যুক্তরাষ্টের স্বাধীনতার ঘোষণা পত্র ছিল প্রোজেক্টের প্রথম ডিজিটাল বই। প্রোজেক্টের নাম রাখা হয় ১৫ শতকের বিখ্যাত প্রকাশক জোহানস গুটেনবার্গের নামানুসারে যিনি বহনযোগ্য ছাপাখানার জন্য বিখ্যাত ছিলেন।

Pietro Di Zmiceli ১৯৯৪ সাল থেকে প্রোজেক্টের অনলাইন ভার্সন চালু করেন । মার্চ ২০০৯ পর্যন্ত প্রোজেক্ট গুটেনবার্গের বইয়ের সংখ্যা ৩০০০০ এরও বেশী। সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগ্রহসহ মোট বইয়ের সংখ্যা ১০০০০০ এরও বেশী। প্রতি সপ্তাহে গড়ে ৫০ টি করে নতুন বই যুক্ত হয় এই ডিজিটাল লাইব্রেরীতে। এই সংগ্রহে রয়েছে গল্প, কবিতা, উপন্যাস, নাটক, রেফারেন্স বই সহ হব ধরণের বই এমনকি রান্নার বইও। এছাড়াও সামান্য কিছু অডিও বই ও গানও রয়েছে। কালের বিবর্তনে শুধু ইংরেজীই নয়, প্রোজেক্টে যুক্ত হয়েছে ফ্রেন্স, জার্মান, ফিনিস, ডাচ, পর্তুগীজ ও চাইনিজ বই। বাংলা সাহিত্যের মধ্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাঁকুরের একটি বই আছে ইংরেজী অনুবাদে।

সারা বিশ্বের ১০০০০ এরও বেশী সেচ্ছাসেবকের অবদানে গড়ে উঠেছে এই বিশাল সংগ্রহ। বিশ্বের যেকেউ অবদান রাখতে পারেন এখানে বই স্ক্যানিং, প্রুফ রিডিং ও সিডি-ডিভিডি বিতরণের মাধ্যমে। যেহেতু প্রোজেক্ট গুটেনবার্গ বইগুলো বিনামূল্যে বিতরণ করে তাই এই সংগ্রহের পুরোটাই কপিরাইট মুক্ত। অধিকাংশ বই-ই ১৯২৩ সালের আগে প্রকাশিত।

বইগুলো ডাউনলোড করা যাবে http://www.gutenberg.org , http://www.manybooks.net এবং মোবাইলের জন্য http://mnybks.net/index.wml ঠিকানা থেকে। আপনি চাইলে তারা বইয়ের সিডি বা ডিভিডি আপনাকে বিনামূল্যেও পাঠাবে। এজন্য আপনাকে আনুরোধ করতে হবে Click This Link ঠিকানায় গিয়ে, তবে এক্ষেত্রে সময় লাগবে ৬ মাসেরও বেশী /:)। সিডিটিতে রয়েছে ৬০০টি বই আর ডিভিডিতে ১৭০০০ বই।